মার্কিন নেত্বতৃধীন বাহিনীর কাছে ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার ২০ বছর পর ফের আফগানিস্তানের ক্ষমতা নিচ্ছে তালেবান। তালেবানের সিনিয়র নেতা মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে।আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার করার পর যে আফগান ইস্যুতে ফের পাকিস্তানের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানের যে গভীর জাল ছড়ানো রয়েছে, তা ‘কেনার’ চেষ্টা করবে ওয়াশিংটন। তারা ঘরোয়া রাজনৈতিক কারণে এখন অন্তত এটুকু নিশ্চিত করতে চাইবে যে, তালেবানি সন্ত্রাসের ঢেউ যেন কোনও ভাবে আমেরিকার বুকে আছড়ে না পড়ে। আর এই আশ্বাসের বিনিময়ে চড়া দাম নেবে ইসলামাবাদ। এটি অবশ্য তারা আমেরিকার কাছ থেকে ধারাবাহিকভাবে নিয়ে এসেছে গত দেড় দশক। তা সে ইসলামাবাদের ওপর থেকে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ওঠানোই হোক বা এফএটিএফের নজরদারি থেকে মুক্তি।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, ইসলামাবাদের এই সম্ভাব্য বাড়বাড়ন্তে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন দিল্লি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির বৈঠকে শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে এই সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আফগান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সেখানে আটকে থাকা ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনাই অগ্রাধিকার। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল প্রমুখ। বৈঠকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছেন সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত রুদ্রেন্দ্র টন্ডন। তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের মুখে যাকে সদ্য দেশে ফিরিয়ে এনেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
খবরে আরও বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কাবুলের পতন নিয়ে ফোনেও কথা বলেছেন জয়শঙ্কর। আফগানিস্তানে আটকে পড়া ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নতুন ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা কৌশল তৈরি নিয়ে সক্রিয়তা চরমে। তালেবানদের অস্ত্রঝঙ্কারের পেছনে যে প্রধান ইন্ধন, সেই ইসলামাবাদের গুরুত্ব বৃদ্ধিই প্রধান উদ্বেগ নয়াদিল্লির।
দিকে বারাদারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সখ্যতা ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। সূত্র বলছে, ১৯৮০ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত বাহিনী হটাতে মার্কিন বাহিনীর সহায়তায় লড়াই করেছেন তিনি।
মোল্লা ওমরের বিশ্বস্ত সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম বারদার ২০১০ সালে আইএসআই আর সিআইএ’র যৌথ অভিযানে তিনি পাকিস্তানের করাচি শহরে ধরা পড়েন। ২০১৮ সালের ২৫ অক্টোবর বারাদারের ছাড়া পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল তালেবান।