রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও রুয়েটে ইয়াবা চক্রের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক যুগান্তর ও রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদ পত্রিকার রাবি প্রতিনিধিসহ তিনজনের নামে পৃথক দুটি মানহানির মামলা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুজন নেতা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন তারা।
পৃথক দুটি মামলায় একই ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আসামি দৈনিক যুগান্তর ও স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদ পত্রিকার রাবি প্রতিনিধি হাসান আদিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। মামলার বাকি দুজন আসামি হলেন এসএ টিভির রাজশাহী প্রতিনিধি জিয়াউল গণি সেলিম ও এসএ টিভির ক্যামেরাম্যান সাঈদ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রবিউল আউয়াল মিল্টন ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুশফিক তাহমিদ তন্ময় ৫০০, ৫০১ ও ৫০২ ধারায় এ মানহানি মামলা দায়ের করেন। তবে এ মামলা হয়রানি ও উদ্দেশ্যমূলক বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত সাংবাদিকরা।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েটে ইয়াবা চক্রের বিষয়ে গত ৯ নভেম্বর এসএ টিভি এবং ১০ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে মুশফিক তাহমিদ তন্ময় ও রবিউল আউয়াল মিল্টনের নাম উল্লেখ করে তাদের মর্যাদার হানি ঘটানো হয়েছে। এতে তারা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবী ইমাম হাসান জানান, ‘রাজশাহী মহানগর মুখ্য হাকিম মাহবুবুর রহমানের আদালতে এ মানহানি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন।’
মামলার বিষয়ে যুগান্তর পত্রিকার রাবি প্রতিনিধি হাসান আদিব বলেন, ‘সংবাদের মূল সূত্র স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদক অধিশাখার প্রতিবেদন। এছাড়া সংবাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য এবং রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের সাথে কথা বলে সত্যতা পাবার পরেই সংবাদ পাঠিয়েছি। বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও শুধু দুটি গণমাধ্যমের প্রতিনিধির নামে মামলা করা হয়েছে। সুতরাং এটি পূর্ব শত্রুতা ও উদ্দেশ্যমূলক মামলা ছাড়া আর কিছু নয়। আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণাদি রয়েছে। সেগুলো উপস্থাপন করলে আশা করছি বিষয়টি আদালত বিবেচনা করবেন।’
এসএ টিভির রাজশাহী প্রতিনিধি জিয়াউল গণি সেলিম বলেন, ‘হয়রানির উদ্দেশ্যে তারা এ মামলা করেছে। তাদের আইনগত অধিকার রয়েছে মামলা করার। আমরাও আইনিভাবেই মোকাবিলা করব।’
এদিকে, সাংবাদিকের নামে হয়রানি ও উদ্দেশ্যমূলক মামলা করার প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠনগুলো।
প্রসঙ্গত, গত ১০ নভেম্বর রাবি ও রুয়েটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীসহ ৪৪জন ইয়াবা ব্যবসা চক্রে জড়িত বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের মাদক অধিশাখা। যে প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রীর দফতর হয়ে রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে আসে। প্রতিবেদনের একটি কপি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছেও পাঠানো হয়। যে প্রতিবেদনে মামলার বাদী ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ রাবির ১১ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নাম আসে।
ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত ৯ নভেম্বর এসএ টিভিতে ‘ইয়াবা চক্রে জড়িত রাবি ও রুয়েটের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারী’ এবং ১০ নভেম্বর দৈনিক যুগান্তরে ‘রাবি ও রুয়েটে ইয়াবা ব্যবসায় ৪৪ শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মচারী’ শিরোনামে সংবাদ প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়।
স্মার্ট নিউজ টোয়েন্টিফোর