যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ট্রাক নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলের এ হামলায় আটজন নিহত হয়। এর মধ্যে পাঁচজন আর্জেন্টিনার নাগরিক বলে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে। ১০ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে হামলা ঘটনা ঘটে। সেই সন্ত্রাসী হামলার স্মৃতিজড়িত গ্রাউন্ড জিরো এলাকার কাছাকাছি এবারের হামলার ঘটনা ঘটল।
হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাইফুল্লা হাবিবুলেভিক সাইপোভ নামের এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছবি: এএফপিহামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাইফুল্লা হাবিবুলেভিক সাইপোভ (২৯) নামের এক যুবককে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফ্লোরিডার বাসিন্দা সাইফুল্লা উজবেকিস্তান থেকে আসা অভিবাসী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
বেলা তিনটার দিকে হোম ডিপো নামের দোকান থেকে ভাড়া করা ট্রাক নিয়ে সাইফুল্লাকে ব্যস্ত ম্যানহাটনের পশ্চিম দিক থেকে বাইক লেনে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। পরে চেম্বার স্ট্রিটের মোড়ে একটি স্কুলবাসের সঙ্গে ট্রাকটির ধাক্কা লাগে। এরপর সাইফুল্লা গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তাঁর হাতে আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেলেও পরে জানা গেছে, সেটি ছিল খেলনা বন্দুক। এলাকায় টহলে থাকা পুলিশ গুলি করলে সাইফুল্লার পেটে লাগে। পুলিশ তখন তাঁকে গ্রেপ্তার করে। বাইক লেন দিয়ে পথচারীর ওপর গাড়ি তুলে দিলে লোকজন ছিটকে পড়তে থাকে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ও জরুরি বিভাগের গাড়ি পৌঁছায়।
ট্রাক নিয়ে হামলা চালানো হয়। ট্রাকটি প্রথমে একটি স্কুলবাসকে ধাক্কা দেয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। প্রিয় মুখ দেখে স্বস্তি মেলে মা ও সন্তানের মনে। ছবি: রয়টার্সস্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে এ হামলায় মোট আটজন নিহত হওয়ার কথা জানানো হয়। হাসপাতালে ভর্তি আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া সাইফুল্লার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। যে ট্রাক নিয়ে তিনি হামলা চালিয়েছেন, সেই ট্রাকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। সেখানে লেখা, ‘আইএসের (ইসলামিক স্টেট) পক্ষ থেকে এ হামলা।’
পুলিশ সর্বশেষ জানিয়েছে, উজবেকিস্তান থেকে ২০১০ সালে আমেরিকায় অভিবাসী হওয়া সাইফুল্লা হাবিবুলেভিক ফ্লোরিডায় থাকতেন। ম্যানহাটনে হামলা করার প্রস্তুতি হিসেবে সম্প্রতি তিনি পাশের রাজ্য নিউজার্সির প্যাটার্সন এলাকায় থাকতে শুরু করেন।
ট্রাকের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলবাস। ছবি: রয়টার্সনিউইয়র্কে জঙ্গি হামলার পরপরই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আইএসের মতো জঙ্গিগোষ্ঠীকে পরাজিত করার পর তারা যেন আমেরিকায় প্রবেশ করতে না পারে। নিউইয়র্কে জঙ্গি হামলার পর মেয়র, গভর্নর ও পুলিশপ্রধান দ্রুত ঘটনাস্থলে যান।
ঘটনাস্থল ঘিরে রাখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ছবি: রয়টার্সপ্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নগরবাসীকে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঘটনাস্থল-সংলগ্ন সড়কপথ ছাড়া বাকি এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কড়া পুলিশি টহল আছে।
বাংলাদেশি ক্যাবচালকসহ ডাউন টাউন এলাকায় কর্মরত প্রবাসীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তাঁরা নিরাপদে আছেন। কোনো বাংলাদেশি হতাহত হওয়ার সংবাদ পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যার পর ম্যানহাটনে হ্যালোইন উৎসবের স্বাভাবিক প্যারেড অনুষ্ঠিত হয়েছে পুলিশের কড়া উপস্থিতিতে।
হামলার পর পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। ছবি: রয়টার্স
স্মার্ট নিউজ টোয়েন্টিফোর