মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিশ্ব আজ তাদের ধিক্কার দিচ্ছে। এটা হতে পারে না। গ্রামের পর গ্রাম তারা পুড়িয়ে দিচ্ছে। বৃদ্ধ, যুবক, নারীদের পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। এটা হতে পারে না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে সাবেক কর কমিশনার ও মুক্তিযোদ্ধা এস এম জাহাঙ্গীরের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমদ এ কথা বলেন।
তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘আমরা ১৬ কোটি মানুষের দেশ, অতি ঘনবসতিপূর্ণ। কিন্তু আমাদের হৃদয় আছে। আমাদের মন আছে। এসব দেখে আমাদের একাত্তরের স্মৃতি ভেসে ওঠে। কীভাবে আমাদের মা-বোন সেদিন ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। সুতরাং আমাদের অভিজ্ঞতা আছে। সে অভিজ্ঞতার আলোকেই মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে এদের (রোহিঙ্গা) আমরা আজকের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা মনে করি অনতিবিলম্বে সে গণহত্যা বন্ধ করা উচিত।’
মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সহায়তা করায় গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবিক নেত্রী বলছে বলে উল্লেখ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘লন্ডনের একটি নাম করা টেলিভিশনে মাদার অব হিউম্যানিটি (মানবতার মা) খেতাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভূষিত করে নিউজ প্রচার করেছে। কিন্তু বাংলাদেশে একটি দল (বিএনপি) আছে যারা অং সান সু চির সঙ্গে তুলনা করে বক্তব্য দাঁড় করিয়েছে। চিন্তা করে দেখেন ওরা কত নোংরা। এদের চিন্তা চেতনা কত নিচু।’
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশের কিছু লোক আছে যাদের দল নাই, দলহীন; তারা সুযোগ পেলে সরকারে বিপক্ষে এবং বিএনপির পক্ষে দাঁড়ায়। তারা বলে আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা তেমন না। কূটনৈতিক তৎপরতা না থাকলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের নিন্দা করল কীভাবে? তারা (ইইউ) বলেছে, তারা (মিয়ানমার) একদিকে বাণিজ্যিক সুবিধা নেবে, অন্যদিকে গণহত্যা করবে, তা হতে পারে না। মিয়ানমারের ঘটনাকে আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখন গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।’
খালেদা জিয়া নিখোঁজ আছেন মন্তব্য করে তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এসেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন। ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসেছেন। জাতিসংঘে আজ এটা আলোচনা হবে। গতকাল পেপারে দেখলাম জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যেটাতে কেউ তার ভেটো প্রদান করেনি। কিন্তু কোথায় খালেদা জিয়া?’
এর আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কক্সবাজার সফর বিষয়ে বলেন, দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রীর বোধোদয় হয়েছে। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তোফায়েল আহমদ এ কথা বলেন।
সংস্কৃতিবিষয়ক সচিব ইব্রাহিম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রমুখ।