এত দিন কেবল সাফল্যই এসেছে। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ ফুটবলের বাছাইপর্বে স্বপ্নের মতোই সময় কেটেছিল বাংলাদেশের মেয়েদের। কী সব ফল! ইরান হারল ৩-০ গোলে, আরব আমিরাত ৪-০ গোলে—এশীয় ফুটবলে এই দুই দেশই শীর্ষ পর্যায়ের। কিরগিজস্তান খেল ১০ গোল, সিঙ্গাপুর চারটা—বাংলাদেশের ফুটবলের প্রেক্ষাপটে স্বপ্নের মতোই। কিন্তু থাইল্যান্ডে চূড়ান্তপর্ব খেলতে গিয়েই মুদ্রার অন্য পিঠটা দেখা হলো কৃষ্ণা-স্বপ্নাদের। এশীয় ফুটবলের গভীরতা যে কতটা, সেই অভিজ্ঞতা হলো। ইরান-আরব আমিরাত যে উত্তর কোরিয়ার মতো দলের কাছে নস্যি, সেই বাস্তবতাটা প্রথম দিনই বাংলাদেশ বুঝল ৯-০ গোলে হেরে।
অনেকেই বলছেন ফলটা অনুমিতই ছিল। হ্যাঁ, হারটা হয়তো অনুমিতই ছিল, কিন্তু তাই বলে এই স্কোরলাইন? মেয়েদের অনেকেই নাকি এই ফলে হতবাক। রীতিমতো ধাক্কা হয়েই এসেছে তাদের জন্য এই স্কোরলাইন। রাতে হোটেলে ফিরে অনেকেই কান্নাকাটি করেছে—আমরা কী এতটাই বাজে দল!
বাফুফের টেকনিক্যাল ও স্ট্র্যাটেজিকাল ডিরেক্টর পল স্মলি মনে করেন, স্কোরলাইনের মতো এত বাজে দলে বাংলাদেশ না হলেও এটাই বাংলাদেশের নারী ফুটবলের আসল চিত্র। তবে মেয়েদের আরও ভালো করার সামর্থ্য আছে।
পরের ম্যাচটাও কঠিন। প্রতিপক্ষ জাপান। নারী ফুটবলে বিশ্বের অন্যতম সেরা দল। এই ম্যাচেও কী উত্তর কোরিয়ার মতোই কিছু ঘটতে যাচ্ছে। স্মলির মতে, ‘আমরা কাল কঠিন পেশাদার একটি দলের কাছে হেরেছি। এই দলটা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিয়মিতই সাফল্য পেয়ে আসছে। ওদের সঙ্গে ওই নির্দিষ্ট মুহূর্তে মেয়েরা যা খেলেছে, এটা আমাদের ফুটবলের আসল চিত্র। তবে মেয়েদের আরও ভালো করার সামর্থ্য আছে।’
আজ সকালে চনবুরির বাং সাইন সৈকতে হাঁটতে বেরিয়েছিল গোটা দল। সকলের মুখই বিষণ্ন। সেখানে হালকা স্ট্রেচিংয়ের পর ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্যাল এডুকেশন মাঠে প্রায় সোয়া ঘণ্টার অনুশীলন করে তারা। গোলকিপার রোকসানা ও মাহমুদাকে নিয়ে আলাদা কাজ করেছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে রোকসানার ভুলেই যে বেশ কয়েকটা গোল হজম করতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশের সহকারী কোচ সাবিনা খাতুন অবশ্য মেয়েদের হতোদ্যম হতে নিষেধই করছেন, ‘সবাই জানেন আমাদের কাদের সঙ্গে খেলতে হয়েছে। এটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিশাল একটা ব্যাপার। মেয়েরা তাদের শতভাগ দেওয়ার যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। এটা সত্যি খেলার রেজাল্ট নিয়ে সবাই একটু আপসেট। কিন্তু যা হয়ে গেছে সেটা নিয়ে এখন কথা বলে লাভ নেই। ওরা পরের ম্যাচে ভালো করার চেষ্টা করবে।’
