চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে ছুটিতে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেছেন, এটা বিচার বিভাগের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা।
আজ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আজ বিকাল ৩টা সুপ্রিম কোর্টের জেষ্ঠ্য আইনজীবীদের নিয়ে পুনরায় বৈঠক করবে আইনজীবী সমিতি।
গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা এক মাসের ছুটিতে যান। তার অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়।
জয়নুল আবেদীন বলেন, রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে আইনজীবী সমিতি যাতে কার্যকার ভূমিকা রাখতে পারে সে ব্যাপারে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আইনজীবী সমিতির ১৪ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, গতকাল আমরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। জানতে চেয়েছিলাম কোনো চাপে বা কোনো কারণে তিনি ছুটিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন কি না। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি সকালে এসে দুপুর ১টার সময় ছুটির দরখাস্ত দিয়ে কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন। অথচ তিনি আমাদের চিঠি দিয়ে বলেছেন, আদালত খোলার দিন তিনি আমাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। অতীতের রেকর্ড বলে কোনো প্রধান বিচারপতি দাওয়াত দিয়ে এভাবে ছুটি নিয়ে চলে যান নাই। অথচ সাবেক প্রধান বিচারপতি ফজলুল করিম এভাবে দাওয়াত করে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। পরে তিনি হুইল চেয়ারে করে এসে আইনজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, এই প্রধান বিচারপতি এমন কী করেছেন যে তিনি ছুটি নিয়ে চলে গেছেন। তার উপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করা হয়েছে, যাতে তিনি ছুটি নিয়ে চলে যান। দেশ জানে জাতি জানে, সারা পৃথিবী জানে একটি রায়ের পর সরকার তার উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে। যাতে তিনি পদত্যাগ করেন। তিনি ছুটিতে যাননি, ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, যেতে তাকে বাধ্য করা হয়েছে। এজন্য তার সঙ্গে দেখা করে জানার অধিকার রয়েছে।
এ বিষয়ে আমরা কী কী পদক্ষেপ নিতে পারি এজন্য বিকাল ৩টায় সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করব। আইনজীবীরা আজ আমাদের কাছে জানতে চায়, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে সাক্ষাৎ করা প্রয়োজন। আজ যদি মানুষ ছুটির কারণ জানতে না পারে তাহলে জাতির জন্য সেটা দুঃখজনক হবে বলেও জানান জয়নুল আবেদীন।