সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীরা পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক সরকারের স্থিতিশীলতাও হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে পাশে বসিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন সরাসরি এ কথা জানিয়ে দিলেন। আজ বুধবার সুষমা স্বরাজের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়ে টিলারসন বলেন, বহু সন্ত্রাসবাদী সংগঠন পাকিস্তানকে নিরাপদ স্বর্গ হিসেবে মনে করে। যুক্তরাষ্ট্র এসব বরদাশত করবে না।
সৌদি আরব, কাতার, আফগানিস্তান, ইরাক ও পাকিস্তানে ঝটিকা সফর শেষে টিলারসন গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভারতে আসেন। সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের মাটিতে লালিত সন্ত্রাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইসলামাবাদে পাকিস্তানি নেতাদের সঙ্গে আমি খোলামেলা কথা বলেছি। পাকিস্তানের কাছে আমাদের প্রত্যাশা কতখানি তা আমি স্পষ্ট করে তাদের জানিয়ে দিয়েছি। বলেছি, সন্ত্রাসবাদীদের স্বর্গ হয়ে থাকাটা আমরা একেবারেই বরদাশত করব না।’ টিলারসন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা এমন একটা ব্যবস্থা নিতে চলেছি, যাতে এই সন্ত্রাসীরা অন্য দেশে আক্রমণ হানতে না পারে। পাকিস্তানকে আমি বলেছি, আমরা তাদের সঙ্গে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে চাই। কারণ, আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে এটা তাদের পক্ষে মঙ্গলজনক।’
সম্প্রতি আফগানিস্তানে পরপর কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী আক্রমণ ঘটে গেছে। সেসব সন্ত্রাসী আক্রমণ যে পাকিস্তানের মদদে হয়েছে, সরাসরি তা না বললেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেন, ‘নিরাপদ স্বর্গে সন্ত্রাসীরা যে সক্রিয়, এসব ঘটনা তারই প্রমাণ। পাকিস্তানকে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেই হবে।’ টিলারসনের পাশে বসে সুষমা বলেন, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা একমাত্র তখনই সফল হবে, যখন পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
টিলারসনও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত স্বাভাবিক মিত্র। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দুই দেশ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে যাবে।
দুই দেশের এই সুসম্পর্ক সত্ত্বেও মার্কিনদের ইচ্ছা অনুযায়ী ভারত যে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে রাজি নয়, টিলারসনের উপস্থিতিতেই সুষমা সে কথা জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য অনেক কমে গেছে। পিয়ংইয়ংয়ে ভারতীয় দূতাবাসের বহরও নিতান্তই কম। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে ভারত এটা বুঝিয়েছে, আমেরিকার স্বার্থেই তাদের বন্ধু দেশের একটা উপস্থিতি উত্তর কোরিয়ায় থাকা প্রয়োজন। তাতে আলোচনার একটা রাস্তা খোলা থাকে, যা খুবই প্রয়োজনীয়।
সামরিক ক্ষেত্রে মার্কিন সহযোগিতা ক্রমে বেড়ে চলেছে। টিলারসন জানান, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের আধুনিকীকরণে ভারতকে সেরা অত্যাধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তরে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী। ভারতকে এফ-১৬ ও এফ-১৮ যুদ্ধবিমান দিতেও তাঁদের আগ্রহের কথা টিলারসন জানান।
টিলারসন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করেন সন্ধ্যায়।
