অলিম্পিয়াকোস ডিফেন্ডার দিমিত্রিস নিকোলাউ যখন বক্সের ঠিক বাইরে লিওনেল মেসিকে ফেলে দিলেন, ন্যু ক্যাম্প তখন নড়েচড়ে বসল। ফাউলটা দেখতে যথেষ্ট কদর্য ছিল; কিন্তু দর্শকদের ভাবনা তখন অন্য কিছু নিয়েই। মেসি ফ্রি কিক নেবেন, বক্সের ঠিক বাইরে থেকে ফ্রি কিকে ক্যারিয়ারে বহুবার গোল করেছেন। কাল আবারও করলেন। বাঁ পায়ের বাঁকানো শটে গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে আরও একবার ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখিয়ে নিলেন আর্জেন্টাইন তারকা। এই গোলে উয়েফার কোনো প্রতিযোগিতায় শততম গোলের রেকর্ড গড়লেন। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে (১১০) ছাড়িয়ে যেতে অবশ্য আরও কিছু সময় লাগবে, কিন্তু একটা দিক দিয়ে রোনালদোকে ছাড়িয়েছেন তিনি। উয়েফা প্রতিযোগিতায় মেসির ১০০তম গোল হচ্ছে দ্রুততম সময়ে পাওয়া।
ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় শুধু এই দুজনই (মেসি ও রোনালদো) ১০০ বা তাঁর বেশি গোল করেছেন। রোনালদো এই মাইলফলক পেরিয়েছিলেন ১৪৩ ম্যাচ খেলে। অন্যদিকে, মেসি তাঁর চেয়ে ২১ ম্যাচ কম খেলেই শততম গোলের দেখা পেলেন। ২০১৭ সালে এটি মেসির ৫০তম গোল।
এমন অর্জনের পর কোচ এরনেস্তো ভালভের্দের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাই পেয়েছেন মেসি। হাসতে হাসতে বলেছেন, ‘আমি চাই সে এই মৌসুমে ২০০ গোল করুক…আমরা প্রতি অনুশীলনে যা দেখি, মেসি সংখ্যায় সেটিই প্রকাশ করে চলেছে।’
অলিম্পিয়াকোসের বিপক্ষে ৩-১ গোলে দলের জয়ের পরও ভালভের্দে বেশ সাবধানী, ‘খেলার ফল বেশ ভালো এবং সেটি এখনো আমাদের পক্ষেই আছে। এরপর কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন আসবে। ফুটবলে রাতারাতি অনেক কিছুই পাল্টে যায়।’
ক্লাব প্রেসিডেন্ট জোসেপ মারিয়া বার্তেমিউর প্রশংসাও পেয়েছেন লিও, ‘আমি তো তাকে ফুটবলের সকল পুরস্কারই দিতে চাই। কেউই তার মানের নয়। সে একটি নতুন যুগের সৃষ্টি করেছে; আর এখনো সেই পর্যায়েই নৈপুণ্য দেখিয়ে যাচ্ছে।’
এই উচ্ছ্বাসের কারণ অনুমান করতে কষ্ট হয় না। মৌসুম শুরুর আগে ‘বার্তেমিউ হটাও’ আন্দোলনে হঠাৎ ভাটা পড়ার কারণ তো লিওনেল মেসির অবিশ্বাস্য ফর্ম। তাতে ভর করে বার্সাও মৌসুমে এগিয়ে চলেছে দুর্দান্ত গতিতে। চাকরি বাঁচানোর বিনিময়ে ক্লাব প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে কিছু পুরস্কার অবশ্য পেতেই পারেন মেসি।