দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর চারটি জাতীয় মাছ ও ডলফিনের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকুয়েন্স উন্মোচিত হয়েছে। এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এ সম্পর্কিত ঘোষণা প্রদান করেন পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার এনডিসি।
দেশের কার্প জাতীয় মাছের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক প্রজননকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই নদীর রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালবাউশ যেমন দ্রুত বাড়ে, স্বাদেও তেমনি অতুলনীয়। জীবনরহস্য উন্মোচনের ফলে এই মাছগুলোর ‘বিশেষত্বের’ দিকগুলো
জানা সম্ভব হবে। গাঙ্গেয় ডলফিনসহ মৃগেল ও কালবাউশের জীবনরহস্য উন্মোচন এটাই প্রথম।
এর আগে ভারতের গঙ্গা নদীর রুই ও কাতলার জীবনরহস্য উন্মোচন করেছেন দেশটির গবেষকেরা। আর যুক্তরাষ্ট্র উন্মোচন করেছে আটলান্টিক মহাসাগরের ডলফিনের জীবনরহস্য।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দেশের অন্যান্য নদীর রুইজাতীয় মাছের চেয়ে হালদার মাছ দ্বিগুণেরও বেশি হারে বাড়ে, বড়ও হয় খুব তাড়াতাড়ি। হালদার মাছের স্বাদ সবচেয়ে ভালো বলে মনে করা হয়। যে কারণে এখানকার মাছের পোনার দাম দেশের অন্যান্য রুইজাতীয় মাছের পোনার চেয়ে ১৫ গুণ বেশি। কিন্তু হালদা নদীতে রুইজাতীয় মাছ কেন এত ডিম পাড়ে, আর সেখানকার রুই কেন এত দ্রুত বড় হয়, এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা ছিল।
অন্যদিকে হালদা নদীর সঙ্গে গঙ্গার কোনো সরাসরি সংযোগ নেই। এরপরও সেখানে কী করে গাঙ্গেয় ডলফিন এল, এর বৈশিষ্ট্য কী, এটি কি গঙ্গা নদীর ডলফিনের একটি উপ-প্রজাতি, নাকি স্বতন্ত্র গুণাবলি নিয়ে আলাদা প্রজাতির বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে, বিজ্ঞানীরা অনেক দিন ধরে এসব জানার চেষ্টা করছিলেন। জীবনরহস্য উন্মোচনের ফলে এসব জানা সহজ হয়ে গেল বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা। একই সঙ্গে রুইজাতীয় মাছের আরও উন্নত জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এ গবেষণা ভূমিকা রাখবে বলে তাঁরা মনে করছেন।