শ্রীলংকায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপর আক্রমণ করা উগ্র বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ‘পশু’ অভিহিত করেছে দেশটির সরকার। বুধবার দেশটির মন্ত্রিপরিষদের মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে বলেন, মঙ্গলবার জাতিসংঘের সেফ হাউজে থাকা ৩১ রোহিঙ্গার উপর আক্রমণের নিন্দাজ্ঞাপন করেছে শ্রীলংকা সরকার।
গত মঙ্গলবার শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোর কাছে ৩১ রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয়স্থল এই শরণার্থী কেন্দ্রে কিছু উগ্র বৌদ্ধভিক্ষুর নেতৃত্বে হামলা চালায়। বহুতল ভবনটির গেট ভেঙে প্রবেশ করে দরজা ও আসবাবপত্র ভাঙচুর। শরণার্থীদের হতাহতের কোনো খবর না পাওয়া গেলেও তাদের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই পুলিশ আহত হন।
ওই সেফ হাউজে আশ্রয় নেয়া ৩১ রোহিঙ্গাকে ৫ মাস আগে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে শ্রীলংকার নৌবাহিনী। তারা তামিলনাড়ুর একটি শরণার্থী কেন্দ্রে কয়েক বছর বাস করার পরে সেখান থেকে বের হয়ে যায়।
হামলার নিন্দাজ্ঞাপন করে সেনারত্নে বলেন, যা হয়েছে তাতে একজন বৌদ্ধ হিসেবে আমি লজ্জিত। অল্পকিছু বৌদ্ধভিক্ষুর নেতৃত্বে এই হামলার কারণে ছোট শিশু কোলে নিয়ে মায়েদের সেফ হাউজ থেকে বের হয়ে যেতে হয়েছে। সেনারত্নে বলেছেন, যেসব পুলিশ উগ্র জনতাকে নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেনারত্নে যোগ করেন, বুদ্ধ আমাদের এটা শেখাননি। আমাদের শরণার্থীদের সমব্যথী হতে হবে। যেসব ভিক্ষু এই হামলা চালিয়েছে তারা প্রকৃতপক্ষে পশু।
শ্রীলংকার উগ্রবাদী বৌদ্ধ ভিক্ষুদের সঙ্গে মিয়ানমারের উগ্র জাতীয়তাবাদী ভিক্ষুদের যোগযোগ রয়েছে। দুই পক্ষের বিরুদ্ধেই এই দুই দেশে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। সিনহালে জাথিকা বালামুলুয়া (সিনহলিজ ন্যাশণাল ফোর্স) নামের এই উগ্রবাদী সংগঠনের এক সদস্য ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, এরা হচ্ছে রোহিঙ্গা জঙ্গি যারা মিয়ানমারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হত্যা করেছে। এএফপি।